নতুন বছরে Commercial সিনেমার প্রত্যাবর্তন শীঘ্রই পর্দায় আসতে চলেছে বছরের প্রথম বাণিজ্যিক ছবি খাঁচা

নতুন বছরে Commercial সিনেমার প্রত্যাবর্তন.✨
শীঘ্রই পর্দায় আসতে চলেছে বছরের প্রথম বাণিজ্যিক ছবি।
জাতীয় স্তরে বিভিন্ন পুরস্কার প্রাপ্ত, দর্শক সমাদৃত, রাফায়ত রশীদ মিথিলা অভিনীত … “ও অভাগী” চলচিত্রের সফল যাত্রাপথের পর স্বভূমী এন্টারটেন্মেন্ট ও ডঃ প্রবীর ভৌমিকের আগামী নিবেদন, সিনেবাপ এন্টারটেইনমেন্টের সহ প্রযোজিত, অনির্বাণ চক্রবর্তী পরিচালিত – “খাঁচা”।
উল্লেখ্য বিষয়..
‘খাঁচা’… শুধু সিনেমা নয়,
প্রকৃত অর্থে জনস্বার্থে প্রচারিত এক বার্তা।
বাস্তবে HUMAN TRAFICKING – এর SURVIVOR রা কিভাবে ‘খাঁচা’-র সাথে যৌথ উদ্যোগে কিছু দৃষ্টান্তমূলক কার্যক্রম তৈরী করছে তা ক্রমশঃ প্রকাশ্য।
কাহিনী, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: অনির্বাণ চক্রবর্তী
চিত্রগ্রাহক (DOP): মলয় মণ্ডল
সঙ্গীত পরিচালক: মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় এবং অমিত
অভিনয়ে
‘সিনেবাপ’ মৃন্ময়: কমলেশ
রজতাভ দত্ত: মামা
মীর: মাহাতো (মন্ত্রী)
প্রত্যুষা পাল: রাধিকা
অনিন্দ্য ব্যানার্জি: সম্পদ
কাঞ্চনা মৈত্র: মামী
সোনালী চৌধুরী: কমলেশের মা
কৃষ্ণ ব্যানার্জি: ট্যাবলেট
ইমন চক্রবর্তী: মইদুল
অরুণাভ দত্ত: ও.সি
নবাগতা পূজা চ্যাটার্জী: রেশমী
এবং অন্যান্যরা
গণমাধ্যম প্রচার ও মার্কেটিং: রানা বসু ঠাকুর
| মূল গল্প: |
নুন আনতে পান্তা ফুরানো, হতদরিদ্র গ্রাম টিয়াবন দেখতে আপাত দৃষ্টিতে শান্ত। পুলিশের খাতাতেও কোন ব্যাপারেই খুব একটা কোন অভিযোগ জমা পড়ে না। তবে আসলে সেখানে বা তার আশেপাশের বেশ কিছু গ্রামে গভীরভাবে কান পাতলে বোঝা যায়, শান্ত জায়গা মোটেও শান্তিতে নেই। এক বিরাট ষড়যন্ত্র চলছে গোটা এলাকা জুড়ে। গত তিরিশ বছর ধরে লেবার ট্রান্সপোর্টের ব্যবসার নামে এক বিরাট নারী পাচার চক্র চালায় বিশ্বম্ভর বিশ্বাস ওরফে মামা এবং তার প্রথম স্ত্রী মীনাক্ষী দেবী ওরফে মামী। কত ছোট ছোট নিষ্পাপ মেয়ের জীবন যে ওরা নষ্ট করে চলেছে তার ইয়ত্তা নেই।
কমলেশ ওই গ্রামেরই ছেলে। ছোটবেলায় তার দিদিকে মামী এবং তার দলবল তুলে নিয়ে গিয়েছিল তার সামনেই। কিন্তু সে তখন কিছুই করতে পারেনি। তার মা পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ কোন অভিযোগ জমাই নেয় না। উল্টে কে বা কারা তার মা’কেই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়। দিদিকে সে আজও খুঁজে পায়নি। তার লড়াই চলছে মামার বিরুদ্ধে, মামীর বিরুদ্ধে, সে সব অসাধু মানুষগুলোর বিরুদ্ধে, যারা এই সমাজকে কলুষিত করেছে, যারা গরিব মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে তাদের মেয়ে বউদের পাচার করে দিচ্ছে।
গতিময় কাহিনীর পরতে পরতে রয়েছে রোমহর্ষক দ্বন্দ্ব, আর অধর্মের অধঃপতনের দুর্ধর্ষ সংঘাতের অ্যাক্শন। টানটান চিত্রনাট্যে আলো আঁধারের হিসেব নিকেষ। অবশেষে কিভাবে সত্যের জীত হয়, সেই নিয়েই আবর্তিত খাঁচার কাহিনী ।
পরিচালক পরিচিতি
অনির্বাণ চক্রবর্তী, একজন পরিচালক হিসেবে গত ১০ বছর ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণের জগতে বিচরণ করে এসেছেন। শুরুতে তিনি বেশ কিছু প্রখ্যাত পরিচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন এবং সৃজনশীলতার ছাপ রেখে যাওয়ার আন্তরিক উদ্দেশ্যে তরুণ বয়সেই স্বাধীনভাবে পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি বহু টেলিভিশন প্রোডাকশন (কল্পকাহিনি ও অ-কল্পকাহিনি), স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র, তথ্যচিত্র, বিজ্ঞাপনচিত্র, কর্পোরেট ফিল্ম এবং ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করেছেন।
“মল্লিকবাড়ি” ছিল তার পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যর চলচ্চিত্র। এর পর তিনি ‘পিকলুর জানালা’, ‘জাহ কালা’, ‘বনসুন্দরি’, ‘নন্টে ফন্টে’, এবং ‘ভাওয়েল’-এর মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। সম্প্রতি তার নির্মিত, রাফায়ত রশীদ মিথীলা অভিনীত, *”ও অভাগী” ছবিটি দর্শক মহল ও ফিল্ম সমালোচকদের দ্বারাও সমাদৃত হয়েছে। এবং জাতীয় স্তরে বিভিন্ন পুরস্কার প্রাপ্ত করেছে।
পরিচালকের মন্তব্য
“ও অভাগী” আমার শেষ ফিচার ফিল্ম ছিল, যা সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেছিল এবং জাতীয় পর্যায়ে বেশ কিছু পুরস্কার জিতেছিল। তবে আমি কখনো কোনো নির্দিষ্ট সীমায় আবদ্ধ থাকতে চাইনি। সিনেমা মানেই বিনোদন, তাই আমি সবসময় নতুন দর্শকদের (TG) কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করি। আমার প্রযোজককে ধন্যবাদ, যিনি আগের মতোই আমার উপর বিশ্বাস রেখেছেন।
বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী, বড় বড় তারকারা সিলভার স্ক্রিন থেকে OTT এবং অন্যান্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক প্ল্যাটফর্মে আসছেন শো’বিজে টিকে থাকার জন্য। তাহলে কেন এই প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতিভাবান এবং দক্ষ তারকারা বড় পর্দায় পা রাখতে পারবেন না?
আমার প্রতিভাবান এবং উৎসাহী ইউনিটের সঙ্গে কাজ করতে সবসময় দারুণ আনন্দ পেয়েছি। তপ্ত গ্রীষ্মে আমরা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় শুটিং করেছি, এবং কনকনে শীতকালে দার্জিলিংয়ে শুটিং করেছি। কিন্তু কেউ কোনো অভিযোগ করেনি, কারণ পুরো ইউনিটটাই ছিল একটা বড় পরিবারের মতো।
যখন রজতাভ দত্ত, মীর আফসার আলি, কাঞ্চনা, অনিন্দ্য ব্যানার্জি, সোনালি, মৃণ্ময়, প্রত্যুষা, কৃষ্ণার মতো শিল্পীরা সেটে থাকেন, তখন প্রতিটি মুহূর্তই স্মরণীয় হয়ে ওঠে। তবে একটি বিশেষ রাত আমার স্পষ্ট মনে পড়ে। আমরা কালিম্পংয়ের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় শুটিং করছিলাম। হঠাৎ স্থানীয় ম্যানেজার আমার কাছে এসে একটি ভিডিও দেখালেন, যেখানে কয়েক ঘণ্টা আগে ঠিক সেই জায়গায় একটি চিতা দেখা গিয়েছিল, যেখানে আমি বসেছিলাম। এবং কাকতালীয়ভাবে ঠিক সেই সময় কোনো এক প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সমস্ত লাইট বন্ধ হয়ে যায়। সম্পূর্ণ অন্ধকারে পাহাড়ি জঙ্গলের মধ্যে একমাত্র দৃশ্যমান ছিল মোবাইল স্ক্রিনে থাকা সেই চিতার চাহনি। এবং তখন আমি বুঝতে পারি যে আমি তার এলাকায় অনাহূত অতিথি, সে নয়।
অভিনেতা ও সহ প্রযোজক মৃন্ময়ের মন্তব্য-
অনেকেরই মনে হতে পারে, পপুলার ইউটিউবার হিসেবে মেইনস্ট্রিম কমার্শিয়াল সিনেমায় কীভাবে প্রত্যাবর্তন হলো…
হিরো হওয়ার ইচ্ছা আমার বহু বছরের। এক দশকের ওপরে অভিজ্ঞতা…২০১২ থেকে মিডিয়াতে কাজ শুরু করেছি, প্রথমে রিয়েলিটি শো, তারপর ইউটিউব। কিন্তু তারও আগে থেকে আমার স্বপ্ন হিরো হওয়ার। কিন্তু মেইনস্ট্রিম কমার্শিয়াল সিনেমায় হিরো হওয়া মুখের কথা নয়। তার জন্য – সঠিক প্রিপারেশন, সঠিক মানুষদের সান্নিধ্যে আসা, আর সঠিক সময়টা খুব দরকার।
ইউটিউবটা আমার প্যাশন এবং প্রফেশন, কিন্তু হিরো হওয়াটা আমার অ্যাম্বিশন। এটা ২০২৫-এ ফুলফিল হতে যাচ্ছে।
ডিরেক্টর অনির্বাণ চক্রবর্তী ও স্বভূমী প্রোডাকশন হাউসের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিলো অসাধারণ!
ডিরেক্টর অনির্বাণ চক্রবর্তী ভীষণ পজিটিভ, জয়ফুল একজন মানুষ। খুব এঞ্জয় করে, কিন্তু কাজের সময় ততটাই সিরিয়াস। খুব শার্প ব্রেইনের, হার্ড ওয়ার্কিং একজন ডিরেক্টর। অনেক কিছু শিখেছি তার থেকে। অন ক্যামেরায় সে আমার ক্যাপ্টেন, কিন্তু অফ ক্যামেরায় খুব ভালো বন্ধু আমরা।
আর স্বভূমি এন্টারটেইনমেন্ট প্রোডাকশন হাউসে আমি খুব হোমলি ফিল করি। প্রোডিউসার ডঃ প্রবীর ভৌমিক বাবুকে আন্তরিক ধন্যবাদ। হিরো হিসেবে নতুন ছেলেকে লঞ্চ করার রিস্ক সবাই নিতে চায় না। সেখানে আমার মতো টলিউডের বহিরাগত, ইন্ডাস্ট্রিতে যার কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই, সেই রকম একজনের ওপর ভরসা উনি করেছেন। আর আমি এই ভরসার যোগ্য প্রতিদান দেবই, এই আত্মবিশ্বাস আছে।
আর একজনের কথা বলতেই হবে। এই প্রোডাকশনের এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার কৃষ্ণ ব্যানার্জি। সে ছাড়া “খাঁচা” শুরুই হতো না।
আমার প্রিপারেশন:
কমলেশ চরিত্রের জন্য একটা মাসকুলার ফিগারে ট্রান্সফর্মেশন দরকার ছিল। তার জন্য শুটিং-এর আগের ৬ মাস মেইনস্ট্রিম স্পোর্টসম্যানদের মতো একটা হার্ড রুটিন আর হার্ড ডায়েটিং ফলো করতে হয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল। আমি ডিস্ট্রিক্ট বডি বিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপে “মি. কুচবিহার” হয়েছিলাম কলেজ লাইফে। আর “মি. নর্থ বেঙ্গল” প্রতিযোগিতায় সেকেন্ড হয়েছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা খুব কাজে লেগেছে এই ট্রান্সফরমেশন ট্রেনিং-এ।
আর হ্যাঁ, সেই টাফ রুটিনে আমাদের কুল ডিরেক্টর বিরিয়ানি দিয়ে লাঞ্চ করতে করতে আমাকে ফোন করে খোঁজ নিতো আমি বোয়েলড চিকেন খেয়েছি কিনা!
তবে এখন কমার্শিয়াল সিনেমার সেই অধ্যায় কিছুটা হারিয়ে গেছে, যেখানে হিরোর লুক আর বিদেশে ২-৩টা ঝকঝকে গান হলেই সিনেমা হিট। এখন এগুলোর পাশাপাশি অভিনয়ের প্রতিভা ও খুব দরকার ইমপ্যাক্ট ফেলার জন্য। সেই ওয়ার্কশপও হয়েছে, ডিরেক্টর আমাকে অনেক গাইড করেছে।
আমার কাছে এই “খাঁচা”-র প্ল্যানিং থেকে শুরু করে তার প্রি-প্রোডাকশন, শুটিং, এই পুরো জার্নিটাই গোল্ডেন মেমোরি।
একটা ছেলের বহু বছরের হিরো হওয়ার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। এই জার্নির প্রতিটা মুহূর্ত আমার কাছে স্পেশাল মেমোরি। আলাদা করে কিছু নেই।
প্রযোজক ড: প্রবীর ভৌমিকের মন্তব্য:
গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ এখনও প্রচুর ভালোবাসে বাণিজ্যিক ফিচার ফিল্ম দেখতে।
আমি মানুষের জন্য দারুণ সিনেমা তৈরি করতে প্রস্তুত, যা শুধুমাত্র বাংলা সিনেমার উপর প্রভাব ফেলবে না, বিশ্ব চলচ্চিত্রেও একটি দাগ কাটবে।
আজকের নতুন মুখরাই আগামী দিনের বড় তারকা। এটা সবার ক্ষেত্রেই ঘটছে। তারা নতুন সুযোগের সন্ধান করছে। আমি তাদের সম্ভাবনা পছন্দ করি এবং শ্রদ্ধা করি। আগামী দিনে প্রতিষ্ঠিত শিল্পী ও নতুন প্রজন্মের সাথেও কাজ করতে হবে। আমার মনে হয় তাতে নতুন কর্মসংস্থানই নয়, আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ও আরো সমৃদ্ধ হবে ।