বর্তমানে ভিন্ন ধর্মী ছবি দর্শকদের মন জয় করেছে। গতানুগতিক নায়ক-নায়িকা নিয়ে রচিত বাংলা সিনেমার থেকে ধারা বদল করে ভিন্নধর্মী ছবিতে মন দিয়েছেন প্রযোজক পরিচালকরা। তা সে নতুন পরিচালক বা প্রযোজক হন কিংবা পুরনো প্রযোজক পরিচালক। সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ভিন্ন স্বাদের গল্পের আনাগোনা। ঠিক এরকমই একটি ছবি হল তোর্সা একটি নদীর নাম।
সম্প্রতি কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত হয়েছিল এই ছবির ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক শ্রীজিৎ মুখার্জি, সংগীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র, অভিনেতা লামা, ছবির পরিচালক কৃষ্ণেন্দু সান্নিগ্রহী সহ এক ঝাঁক কলাকুশলীরা।
এবার আসা যাক ছবির মূল গল্পে। ছবিটি প্রধানত শিশুদের নিয়ে তৈরি। ছবির শুটিং হয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়। উত্তরবঙ্গ বলতেই আমাদের প্রথমেই মাথায় আসে তিস্তা নদীর কথা।। আর তারপরই তোরসা। যে কোন সিনেমা বা নাটক প্রত্যেকটাতেই তিস্তাযই বারবার প্রাধান্য পেয়ে এসেছে। তোর্সা কিছুটা প্রচারের আড়ালেই আছে। তোর্সাকে প্রচারে আনার জন্যই নির্মাল্য ঘোষ এর এই প্রয়াস। তার কথায় তিস্তা তোর্সা দুই বোন হলেও তোর্সা কিছুটা আড়ালেই রয়ে গেছে, তাই তোর্সাকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। এই ছবিতে দেখা যাবে, এক উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়ে তোর্সার গল্প। তোর্সার বাবা কোচবিহারে জেলাশাসক। উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়েকে ভালো স্কুলে ভর্তি করানো হলেও সে মানতে চায় না কোন শাসন।
সব সময় প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকতে চায়। পাখি হয়ে উড়ে যেতে চায় তোর্সা নদীর তীরে। সে তো উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়ে এই সব তাঁর পরিবার মানবে কেন? এই নিয়েই চলে দ্বন্দ্ব। ইতিমধ্যে তার সাথে আলাপ হয় বস্তির কয়েকজন ছোট ছোট বাচ্চাদের সাথে। তাদেরকে সে পড়ায় তাদের সাথে খেলা করে। কিন্তু পরিবার সেটাও মেনে নিতে চায় না। বাবা-মায়ের কোন বারনই সে শোনে না বারবার ফিরে যায় তার বস্তির বন্ধুদের কাছে। একসময় এই বস্তি উচ্ছেদের পরামর্শ দেন তার জেলাশাসক বাবা। তাদের রক্ষা করতেও এগিয়ে আসে ছোট্ট তোর্ষা। এখন দেখার ক্ষমতা জিতবে নাকি ভালোবাসা জিতবে? খরস্রোতা তিস্তার মত সে তোর্সা ও বহমান, জাত পাত ধর্ম সে কোন কিছুকেই গ্রাহ্য করে না, তার কাছে প্রকৃতির সান্নিধ্য ও মানুষের ভালোবাসাযই সব| তোর্সা কি পারবে ক্ষমতার লড়াইয়ের বিরুদ্ধে জিততে? সেটাই এই ছবির মূল উপজীব্য। ইতিমধ্যেই এই ছবিটি নিউইয়র্ক, প্যারিস, দিল্লি সহ বেশ কয়েকটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে জায়গা করে নিয়েছে। বলাবাহুল্য মন জয় করেছে | এবার কলকাতার দর্শকদের মন জয়ের পালা। ছবিটির গল্প লিখেছেন পুলক কুমার দাস, সংগীত পরিচালনা করেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র। শিল্পী ইমন চক্রবর্তীর কন্ঠে একটি গানও রয়েছে আরেকটি গান গেয়েছেন রূপম ইসলাম। খুব শীঘ্রই মুক্তি পেতে চলেছে ছবিটি।